পার্ট - ৮ || সূরাঃ আল বাকারা
✅সূরা আল বাকারার ২৩১ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ছাবেত ইবনে ইয়াছির স্বীয় স্ত্রীকে এক তালাক দিয়ে ইদ্দত পার হওয়ার তিন দিন পূর্বে তাকে পুনরায় গ্রহন করে নেয়, অতঃপর দ্বিতীয় তালাক দিয়ে এবং পুনরায় ইদ্দত পূর্ন হওয়ার তিন দিন পূর্বে তাকে পুনরায় গ্রহন করে নেয়, অতঃপর দ্বিতীয় তালাক দিয়ে এবং পুনরায় ইদ্দত পূর্ন হওয়ার তিন দিন পূর্বে আবার গ্রহন করলেন এবং অপর তালাক দিয়ে দিলেন, তিন মাস পর্যন্ত এইরূপ করলেন যার ফলে তাঁর স্ত্রী অনেক হয়রানীর শিকার হল। তখনই এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাযিল হয়। এছাড়াও হযরত আবু দারদা (রাজিঃ) হতে বর্ণিত, ইসলামের প্রাথমিক যুগে কতিপয় লোক স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে বলত যে, আমরা এটা অনর্থক করেছিলাম, আমাদের উদ্দেশ্য তালাক দেওয়া ছিল না বরং ক্রীড়া কৌতুক হিসাবেই করেছিলাম, এমনি ভাবে গোলাম আজাদ করেও বলত যে, আমরা তো কেবল কৌতুক করেছিলাম। তখনই এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাযিল হয়।
✅তোমরা যখন নারীদেরকে তালাক দেবে, তারপর তারা ইদ্দত পূর্ণ করবে, তখন হে অভিভাবকেরা তোমরা তাদেরকে এ কাজে বাধা দিয়ো না যে, তারা তাদের প্রথম স্বামীদেরকে পুনরায় বিবাহ করবে যদি তারা পরস্পরে ন্যায়সম্মতভাবে একে অন্যের প্রতি রাজি হয়ে যায়। এর দ্বারা তোমাদের মধ্যে সেই সব লোককে উপদেশ দেওয়া হচ্ছে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে। এটাই তোমাদের পক্ষে বেশি শুদ্ধ ও পবিত্র পন্থা। আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।
—আল বাকারা - ২৩২
✅মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু’ বছর দুধ পান করাবে। এই সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। সন্তান যে পিতার, তার কর্তব্য ন্যায়সম্মতভাবে মায়েদের খোরপোষের ভার বহন করা। হাঁ কাউকে তার সামর্থ্যরে বাইরে চাপ দেওয়া হবে না। মাকে তার সন্তানের কারণে কষ্ট দেওয়া যাবে না এবং পিতাকেও তার সন্তানের কারণে নয়। অনুরূপ দায়িত্ব ওয়ারিশের উপরও রয়েছে। অতঃপর তারা পিতা-মাতা পারস্পরিক সম্মতি ও পরামর্শক্রমে দু’ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি দুধ ছাড়াতে চায়, তবে তাতেও তাদের কোনও গুনাহ নেই। তোমরা যদি তোমাদের সন্তানদেরকে কোন ধাত্রীর দুধ পান করাতে চাও, তাতেও তোমাদের কোনও গুনাহ নেই যদি তোমরা ধার্যকৃত পারিশ্রমিক ধাত্রীমাতাকে ন্যায়ভাবে আদায় কর এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় করে চলো এবং জেনে রেখ, আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ ভালোভাবে দেখছেন।
—আল বাকারা - ২৩৩
✅সূরা আল বাকারার ২৩৩ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মায়েদের উচিত স্বীয় সন্তানদের পূর্ন দুই বছর দুধপান করানো এবং এ সময় পিতার অবশ্যই কর্তব্য হল মায়ের অন্ন-বস্ত্র, নগদ ভাতা ধার্য্য করে দেওয়া। মায়েদেরকে সন্তানের কারণে যেন কোন কষ্ট দেওয়া না হয়। যেমন, তাঁর নিকট থেকে সন্তানকে আলাদা করে লওয়া, অন্ন-বস্ত্র প্রয়োজনের তুলনায় কম দেয়া এবং পিতাকেও যেন কষ্ট দেওয়া না হয়। যেমন, তাঁর নিকট হতে প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ চাওয়া বা সন্তানকে তাঁর উপর ছেড়ে চলে যাওয়া। আর যদি সন্তান পিতৃহীন হয়ে পড়ে, তবে তাঁর উত্তরাধিকারীদের উপর উত্তমরূপেই অন্ন-বস্ত্র ওয়াজিব। আর পিতা-মাতা পরস্পর মতামতের ভিত্তিতে কোন কল্যাণার্থে দু'বছরের পূর্বেই দুধপান ছাড়লে তাতেও কোন দোষ নেই। আর অন্য কোন নারীর নিকট দুধপান করলেও কোন দোষ নেই। কিন্তু ভাতা ইত্যাদি যা ধার্য করা হয় তা থেকে হ্রাস করা ঠিক নয়।
✅তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন তারা নিজেদের ব্যাপারে ন্যায়সম্মতভাবে যা-কিছু করবে যেমন দ্বিতীয় বিবাহ, তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। তোমরা যা-কিছু কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।
—আল বাকারা - ২৩৪
✅সূরা আল বাকারার ২৩৪ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মা যখন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকে এবং তালাকের ইদ্দতে থাকে এবং কোন কারনে অক্ষম না হলে সন্তানকে কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই দুধপান করানো আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর দায়িত্ব ওয়াজিব। আর তালাকের পর ইদ্দতও শেষ হয়ে গেলে পারিশ্রমিক ছাড়া দুধ দেওয়া মায়ের উপর ওয়াজিব নয়।
মাসয়ালা-০১ঃ মা দুধপানে অস্বীকৃতি জানালে তাতে বুঝতে হবে মুলত দুধপান করাতে সে অক্ষম, তখন তাকে বাধ্য করা অবৈধ; অবশ্য সন্তান অন্য কারোর দুধপান না করলে তখন মাকে বাধ্য করা যাবে।
মাসয়ালা-০২ঃ মা দুধপান করাতে প্রস্তুত থাকলে এবং তাঁর দুধে কোন অপকারও না হলে সন্তানকে অন্য ধাত্রির নিকট দুধপান করাতে দেওয়া পিতার জন্য বৈধ হবে।
মাসয়ালা-০৩ঃ রমণী বিবাহত থাকলে বা তালাকপ্রাপ্তা কিন্তু ইদ্দত শেষ হয়নি, এই অবস্থায় দুধপান করানোর জন্যে পারিশ্রমিক গ্রহন অবৈধ। আর ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে গ্রহন করা বৈধ।
মাসয়ালা-০৪ঃ ইদ্দত শেষ হলে এবং মা দুধ পান করাতে পারিশ্রমিক চাইলে আর পিতা সেই পরিমান পারিশ্রমিক দিয়ে অন্যকে দুধপান করাতে চাইলে মা সেজন্য অগ্রগণ্য হবে। অবশ্য মাতা অধিক পারিশ্রমিক চাইলে পিতার জন্য বৈধ হবে, অন্যকে দিয়ে কম পারিশ্রমিকে দুধপান করানো; কিন্তু মাতা চাইলে এতটূকু দাবী করতে পারবে যে, অন্য রমণীকে তাঁর নিকট রেখে দুধপান করানো হোক, যাতে সে সন্তান হতে পৃথক না হয়।
✅ইদ্দতের ভেতর তোমরা যদি নারীদেরকে ইশারা-ইঙ্গিতে বিবাহের প্রস্তাব দাও অথবা তাদেরকে বিবাহ করার ইচ্ছা নিজ অন্তরে গোপন রাখ, তবে তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। আল্লাহ জানেন যে, তোমরা অন্তরে তাদেরকে বিবাহ করার কল্পনা করবে। তবে তাদেরকে বিবাহ করার দ্বিপাক্ষিক প্রতিশ্রুতি দিয়ো না। হাঁ ন্যায়সম্মতভাবে কোন কথা বললে সেটা ভিন্ন কথা। আর ইদ্দতের নির্দিষ্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহের আকদ পাকা করার ইচ্ছাও করো না। স্মরণ রেখ, তোমাদের অন্তরে যা-কিছু আছে আল্লাহ তা জানেন। সুতরাং তাঁকে ভয় করে চলো এবং স্মরণ রেখ, আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
—আল বাকারা - ২৩৫
✅তোমরা স্ত্রীদেরকে এমন সময়ে তালাক দেবে যে, তখনও পর্যন্ত তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করনি এবং তাদের মোহরও ধার্য করনি। এরূপ অবস্থায় তোমরা তাদেরকে কিছু উপহার দিয়ে দিবে। সচ্ছল ব্যক্তি নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এবং অসচ্ছল ব্যক্তি নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী। এতেও তোমাদের কোন গুনাহ নেই। এটা সৎকর্মশীলদের প্রতি এক অত্যাবশ্যকীয় করণীয়।
—আল বাকারা - ২৩৬
✅তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করার আগেই যদি তালাক দাও এবং তোমরা বিবাহকালে তাদের জন্য মোহর ধার্য করে থাক, তবে যে পরিমাণ মোহর ধার্য করেছিলে তার অর্ধেক দেওয়া ওয়াজিব, অবশ্য স্ত্রীগণ যদি ছাড় দেয় এবং অর্ধেক মোহরও দাবী না করে অথবা যার হাতে বিবাহের গ্রন্থি অর্থাৎ স্বামী, সে যদি ছাড় দেয় এবং পূর্ণ মোহর দিয়ে দেয়, তবে ভিন্ন কথা। যদি তোমরা ছাড় দাও, তবে সেটাই তাকওয়ার বেশি নিকটবর্তী। আর পরস্পর সহানুভূতির আচরণ ভুলে যেয়ো না। তোমরা যা-কিছুই কর, আল্লাহ তা নিশ্চিত দেখছেন।
—আল বাকারা - ২৩৭
✅সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।
—আল বাকারা - ২৩৮
✅সূরা আল বাকারার ২৩৮ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আসরের সময়টা সাধারণতঃ কার্যকলাপের সময় হওয়াতে লোকেরা আসরের নামাযে বিলম্ব করত এবং সূর্যস্তের সময় সন্নিকট হলে কাজ বন্ধ করে পড়ে লইত। তখনই এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাজিল হয়। অপর বর্ণনা মতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যোহরের নামায প্রথম সময়ে পড়ে নিতেন, এটা সাহাবাদের জন্য কঠিন ছিল। অতএব প্রথম রিওয়ায়েত মতে, 'মধ্যম নাময বলা হয়। আর নামাযের ওয়াক্ত হিসেবে আসরের ওয়াক্ত মধ্যভাগে হয়, সে হিসাবে তাকে মধ্যম নামায বলা হয়। ওয়াক্ত হিসেবে যে কোন ওয়াক্তের নামাযই মধ্যম নামায হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে বৃত্তাকারে যখন ধরা যায়। তাই প্রতি ওয়াক্তের নামাযকে পা-বন্দি সহকারে পড়া দরকার।
✅তোমরা যদি শত্রুর ব্যাপারে ভয় কর, তবে দাঁড়িয়ে বা আরোহী অবস্থায় নামায পড়ে নিয়ো। অতঃপর তোমরা যখন নিরাপদ অবস্থা লাভ কর, তখন আল্লাহর যিকির সেইভাবে কর যেভাবে তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, যে সম্পর্কে তোমরা অনবগত ছিলে।
—আল বাকারা - ২৩৯
✅তোমাদের মধ্যে যাদের মৃত্যু হয়ে যায় এবং স্ত্রী রেখে যায়, তারা যেন মৃত্যুকালে স্ত্রীদের অনুকূলে ওসিয়ত করে যায় যে, তারা এক বছর পর্যন্ত পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে খোরপোষ গ্রহণের সুবিধা ভোগ করবে এবং তাদেরকে স্বামীরগৃহ থেকে বের করা যাবে না। হাঁ, তারা নিজেরাই যদি বের হয়ে যায়, তবে নিজেদের ব্যাপারে তারা বিধিমত যা করবে, তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। আল্লাহ মহাক্ষমতাবান, প্রজ্ঞাময়।
—আল বাকারা - ২৪০
✅তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ভরণ-পোষণ দেওয়া মুত্তাকীদের কর্তব্য।
—আল বাকারা - ২৪১
✅আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য তাঁর বিধান স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
—আল বাকারা - ২৪২
✅তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ মানুষের প্রতি অতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
—আল বাকারা - ২৪৩
✅তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর এবং জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন এবং সবকিছু জানেন।
—আল বাকারা - ২৪৪
✅কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম পন্থায় ঋণ দিবে, ফলে তিনি তার কল্যাণে তা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন? আল্লাহই সংকট সৃষ্টি করেন এবং তিনিই স্বচ্ছলতা দান করেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
—আল বাকারা - ২৪৫
✅তুমি কি মূসা (আঃ) বা মূসা নবীর পরবর্তী বনী ইসরাঈলের সেই দলের ঘটনা জান না, যখন তারা তাদের এক নবীকে বলেছিল, আমাদের জন্য একজন বাদশাহ নিযুক্ত করে দিন, যাতে তার পতাকা তুলে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি। নবী বললেন, তোমাদের দ্বারা এমন ঘটা অসম্ভব কি যে, যখন তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হবে, তখন আর তোমরা যুদ্ধ করবে না? তারা বলল, আমাদের এমন কি কারণ থাকতে পারে যে, আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করব না, অথচ আমাদেরকে আমাদের ঘর-বাড়ি ও আমাদের সন্তান-সন্ততিদের থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে? অতঃপর এটাই ঘটল যে, যখন তাদের প্রতি যুদ্ধ ফরয করা হল, তাদের মধ্যকার অল্প কিছু লোক ছাড়া বাকি সকলে পেছনে ফিরে গেল। আল্লাহ জালিমদের সম্পর্কে ভালো করেই জানেন।
—আল বাকারা - ২৪৬
✅তাদের নবী তাদেরকে বলল, আল্লাহ তোমাদের জন্য তালূতকে বাদশাহ করে পাঠিয়েছেন। তারা বলতে লাগল, তার কি করে আমাদের উপর বাদশাহী লাভ হতে পারে, যখন তার বিপরীতে আমরাই বাদশাহীর বেশি হকদার? তাছাড়া তার তো আর্থিক স্বচ্ছলতাও লাভ হয়নি। নবী বলল, আল্লাহ তাকে তোমাদের উপর মনোনীত করেছেন এবং জ্ঞান ও শরীরের দিক থেকে তাকে তোমাদের অপেক্ষা সমৃদ্ধি দান করেছেন। আল্লাহ তাঁর রাজত্ব যাকে ইচ্ছা দান করে থাকেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।
—আল বাকারা - ২৪৭
✅বনী-ইসরাঈলদেরকে তাদের নবী আরো বললেন, তালূতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে, তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের সন্তুষ্টির নিমিত্তে। আর তাতে থাকবে মূসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।
—আল বাকারা - ২৪৮
✅অতঃপর তালূত যখন সৈন্যদের সাথে রওয়ানা হল, তখন সে সৈন্যদেরকে বলল, আল্লাহ একটি নদীর দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন। যে ব্যক্তি সে নদীর পানি পান করবে, সে আমার লোক নয়। আর যে তা আস্বাদন করবে না, সে আমার লোক। অবশ্য কেউ নিজ হাত দ্বারা এক আঁজলা ভরে নিলে কোনও দোষ নেই। তারপর এই ঘটল যে, তাদের অল্প সংখ্যক লোক ছাড়া বাকি সকলে নদী থেকে প্রচুর পানি পান করল। সুতরাং যখন সে তালূত এবং তার সঙ্গের মুমিনগণ নদীর ওপারে পৌঁছল, তখন তারা যারা তালূতের আদেশ মানেনি বলতে লাগল, আজ জালূত ও তার সৈন্যদের সাথে লড়াই করার কোনও শক্তি আমাদের নেই। কিন্তু যাদের বিশ্বাস ছিল যে, তারা অবশ্যই আল্লাহর সঙ্গে গিয়ে মিলিত হবে, তারা বলল, এমন কত ছোট দলই না রয়েছে, যারা আল্লাহর হুকুমে বড় দলের উপর জয়যুক্ত হয়েছে! আর আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন, যারা ধৈর্যের পরিচয় দেয়।
—আল বাকারা - ২৪৯
No comments