পার্ট - ৬ || সূরাঃ আল বাকারা
✅আল্লাহ তোমাদের জন্য কেবল, মৃত জীবজন্তু, রক্ত ও শুকরের গোশত হারাম করেছেন এবং সেই জন্তুও, যার প্রতি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়। অবশ্য, কোনও ব্যক্তি যদি চরম অনন্যোপায় অবস্থায় থাকে ফলে এসব বস্তু হতে কিছু খেয়ে নেয়, আর তার উদ্দেশ্য মজা ভোগ করা না হয় এবং সে প্রয়োজনের সীমা অতিক্রমও না করে, তবে তার কোনও গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
—আল বাকারা - ১৭৩
✅সূরা আল বাকারার ১৭৩ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মৃত জানোয়ার" সম্বন্ধে আলেমরা বলেন, এর গোশত খাওয়া, ব্যবহার করা, কেনা বেচা করা কিংবা অন্য কোন পন্থায় লাভবান হাওয়া হারাম। রক্ত খাওয়া যেমন হারাম, তেমনি অন্য কোন উপায়ে তা ব্যবহার করাও হারাম৷ অন্যান্য নাপাক রক্তের ন্যায় রক্তের ক্রয়-বিক্রয় এবং তার দ্বারা অর্জিত লাভালাভও হারাম৷ আল্লাহ্ ব্যতিত অন্য কোন কিছুর সন্তুষ্টি বা নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে যা যবেহ করা হয়, তবে যবেহ করার সময় তা আল্লাহ্র নাম নিয়েই যবেহ করা হলেও হারাম।
✅যারা আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাবকে গোপন করে এবং তার বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া কিছুই ভরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য আছে মর্মান্তিক শাস্তি।
—আল বাকারা - ১৭৪
✅সূরা আল বাকারার ১৭৪ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আজ কাফেরদের আচার-আচরণ দেখলে মনে হয় তাঁরা জাহান্নামের কষ্ট ও শাস্তির পরোয়াই করে না, যেন তাদের ধৈর্যের চাপেই দোযখের তাপ দূর হয়ে যাবে, যেন দোযখ তাদের প্রিয়। দোযখের আগুন তাদের কাম্য। তাই তাঁরা তাদের মনের আনন্দে তারই দিকে ছুটে চলেছে। নিজেদের কার্যকলাপ এবং আচার-আচরণে তারই আয়োজন করছে। নয়তো দোযখ ও ধৈর্যের কোথায় কিসের কল্পনা।
✅যারা হিদায়াতের পরিবর্তে গোমরাহী এবং মাগফিরাতের পরিবর্তে আযাব ক্রয় করে নিয়েছে। সুতরাং জাহান্নামের আগুন সহ্য করার জন্য তারা কতই না ধৈর্যশীল।
—আল বাকারা - ১৭৫
✅আল্লাহ নাযিল করেছেন সত্যপূর্ণ কিতাব। আর যারা কেতাবের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে, নিশ্চয়ই তারা জেদের বশবর্তী হয়ে আল্লাহর পথ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে।
—আল বাকারা - ১৭৬
✅সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই মুত্তাকী।
—আল বাকারা - ১৭৭
✅সূরা আল বাকারার ১৭৭ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আসল পুন্য আল্লাহ্ তায়ালার আনুগত্যের মধ্যেই নিহত। যেদিকে রোখ করে তিনই নামাজে দাড়াতে নির্দেশ দেন, তাই শুদ্ধ ও পুন্যের কাজে পরিণত হয়ে যায়। আন্যথায় দিক হিসাবে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিনের কোনই গুরত্ব নেই।
✅হে মুমিনগণ! যাদেরকে ইচ্ছাকৃত অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কিসাস এর বিধান ফরয করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, গোলামের বদলে গোলাম, নারীর বদলে নারীকেই হত্যা করা হবে। অতঃপর হত্যাকারীকে যদি তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা করা হয়, তবে ন্যায়ানুগভাবে রক্তপণ দাবী করার অধিকার আছে। আর উত্তমরূপে তা আদায় করা হত্যাকারীর কর্তব্য। এটা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে এক লঘুকরণ এবং একটি রহমত। এরপরও কেউ সীমালংঘন করলে সে যন্ত্রণাময় শাস্তির উপযুক্ত।
—আল বাকারা - ১৭৮
✅সূরা আল বাকারার ১৭৮ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ইসলাম-এর আবির্ভাবের কিছু দিন পূর্বে আরবের দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। বিজয়ী সম্প্রদায় বিজেতা সম্প্রদায়ের অনেক দাসদাসী ও নারীদের হত্যা করে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রসূল হিসাবে প্রেরিত হলেন তাঁরা মুসলমান হয়ে গেল; কিন্তু পূর্ববর্তী যুদ্ধের প্রতিশোধ গ্রহণের মনোভাবের কোন পরিবর্তন ইসলাম গ্রহণের কারণে আসেনি, অধিকন্তু বিজেতা গোত্রটি একটি সম্মানিত উচ্চ নামী বংশের মধ্যে পরিগনিত হত। তাই তাঁরা তাদের উপর বিজয়ী গোত্রকে বলল যে, আমরা আমাদের এক গোলামের পরিবর্তে তোমাদের একটি এবং আমাদের একজন নারীর পরিবর্তে তোমাদের একজন পুরুষকে হত্যা করব। তখন অত্র আয়াত অবতীর্ন হয়।
✅হে বুদ্ধিমানেরা! কিসাসের ভেতর তোমাদের জন্য রয়েছে জীবন রক্ষার ব্যবস্থা। আশা করা যায় তোমরা এর বিরুদ্ধাচরণ পরিহার করবে।
—আল বাকারা - ১৭৯
✅তোমাদের উপর ফরয করা হয়েছে যে, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অর্থ-সম্পদ রেখে যায়, তবে যখন তার মৃত্যুক্ষণ উপস্থিত হবে, তখন নিজ পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পক্ষে ন্যায়সঙ্গতভাবে ওসিয়ত করবে। এটা মুত্তাকীদের অবশ্য কর্তব্য।
—আল বাকারা - ১৮০
✅যদি কেউ ওসীয়ত শোনার পর তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয় এবং অর্থ সম্পদ নিজ পিতা মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পক্ষে ন্যায়সঙ্গতভাবে ওসিয়ত না করে, তাতে কোন রকম পরিবর্তন সাধন করে, তবে যারা পরিবর্তন করে তাদের উপর এর পাপ পতিত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন।
—আল বাকারা - ১৮১
✅যদি কেউ ওসীয়তকারীর পক্ষ থেকে অর্থ সম্পদ নিয়ে ভাগাভাগির ক্ষেত্রে অন্যায়মূলক আশংকা করে পক্ষপাতিত্বের অথবা কোন অপরাধমূলক সিদ্ধান্তের এবং তাদের মধ্যে কেহ একজন মীমাংসা করে দেয়, তবে তার কোন গোনাহ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।
—আল বাকারা - ১৮২
✅সূরা আল বাকারার ১৮২ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সামঞ্জস্যের বিধান এই উদ্দেশ্যে যে, কিসাস অনুসারে প্রত্যেক আযাদ ব্যক্তির পরিবর্তে কেবল ঐ এক আযাদ ব্যক্তিকেই হত্যা করতে হবে। এ উদ্দেশ্যে নয় যে, একজনের বদলে একের বেশি ব্যক্তিকে হত্যা করবে।
✅হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা ঈমানদার মুসলমান হিসেবে নিজেদের তৈরি করে নিতে পারে।
—আল বাকারা - ১৮৩
✅গণা-গুনতি কয়েক দিন রোযা রাখতে হবে। তারপরও যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে, তবে অন্য সময়ে সেই সমান সংখ্যা রোজা পূরণ করবে। যারা এর শক্তি রাখে, তারা একজন মিসকীনকে খাবার খাইয়ে রোযার ফিদয়া আদায় করতে পারবে। যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার।
—আল বাকারা - ১৮৪
✅সূরা আল বাকারার ১৮৪ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ইসলামের প্রাথমিক যুগে সুস্থ সবল লোকদের জন্য রোযা না রেখে ফিদয়াই দান করার সুযোগ ছিল। পরবর্তীতে এ নির্দেশ রহিত করা হয়েছে। কিন্তু যে সব লোক অতিরিক্ত বার্ধক্যজনিত কারণে রোযা রাখতে অক্ষম বা দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে একেবারেই নিরাশ হয়ে পড়েছে, সেসব লোকের ক্ষেত্রে উক্ত নির্দেশটি এখনও কার্যকর। সাহাবী ও তাবেয়ীদের সর্বসম্মত অভিমত এটাই।
✅রমযান মাসই হল সেই মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যের পথের যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এই মাসটি পাবে, সে এই মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না, যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।
—আল বাকারা - ১৮৫
✅আল্লাহ রাসূল (সাঃ) কে বলেন, হে নবী, আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তখন আপনি তাদেরকে বলুন যে, আমি এত নিকটবর্তী যে, কেউ যখন আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি। সুতরাং তারাও আমার কথা অন্তর দিয়ে গ্রহণ করুক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে এসে যায়।
—আল বাকারা - ১৮৬
✅সূরা আল বাকারার ১৮৬ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এক গ্রাম্য লোক একদা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট এসে জিজ্ঞাস করল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের পালনকর্তা কি আমাদের নিকটে, যাতে আমরা চুপি চুপি প্রার্থনা করতে পারি? নাকি দূরে যাতে আমাদেরকে চিৎকার করে প্রার্থনা করতে হবে? তখন এই আয়াতটি নাযিল হয়।
✅রোযার রাতে তোমাদের জন্য হালাল করে দেওয়া হয়েছে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস। তারা তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক। আল্লাহ জানতেন, তোমরা নিজেদের সাথে খেয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং তোমাদের ত্রুটি ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাদের সাথে সহবাস কর এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা-কিছু লিখে রেখেছেন তা সন্ধান কর। আর যতক্ষণ না ভোরের সাদা রেখা কালো রেখা থেকে পৃথক হয়ে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা খাও ও পান কর। তারপর রাতের আগমন পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর। আর স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো না, যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত থাক। এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। সুতরাং তোমরা এগুলোর নিকটে যেও না। এভাবে আল্লাহ মানুষের সামনে স্বীয় নিদর্শনাবলী স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারে।
—আল বাকারা - ১৮৭
✅সূরা আল বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ইসলামের প্রথম যুগে নিদ্রা যাওয়ার পর হতে রোযা শুরু হয়ে যেত এবং তখন হতেই পানাহার ও স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি হারাম হয়ে যেত। একবার কায়েস ইবনে ছিরমা আনছারী সারাদিন পরিশ্রমের পর ইফতারের সময় ঘরে ফিরে স্ত্রীর নিকট খাবার চাইলে তিনিই বললেন যে, ঘরে তো কিছুই নেই, আপনি বসুন, আমি অন্যের ঘর হতে চেয়ে আনছি, এ বলে তিনিই চলে গেলেন। এদিকে তিনি শুয়ে পড়তেই নিদ্রাভিভূত হয়ে পড়লেন। তখন আয়াতটি নাযিল হয়। অনুরূপ হযরত ওমর (রাঃ) নিদ্রার পর আপন স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে ফেলেন এবং ভোর বেলায় রাসূল (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে উক্ত ঘটনার বর্ননা দেন। তখনই আয়াতটি নাজিল হয়।
✅তোমরা পরস্পরে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না এবং বিচারকের কাছে সেই সম্পর্কে এই উদ্দেশ্যে মামলা রুজু করো না যে, মানুষের সম্পদ থেকে কোনও অংশ জেনে শুনে পাপের পথে গ্রাস করবে।
—আল বাকারা - ১৮৮
✅আল্লাহ রাসূল (সাঃ)কে বলেন, তোমার নিকট তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে। বলে দাও যে এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্বের সময় ঠিক করার মাধ্যম। আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করার মধ্যে কোন নেকী বা কল্যাণ নেই। অবশ্যই নেকী হল আল্লাহকে ভয় করার মধ্যে। আর তোমরা ঘরে প্রবেশ কর দরজা দিয়ে এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন করতে পার।
—আল বাকারা - ১৮৯
✅সূরা আল বাকারার ১৮৯ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আরবদের জাহেলী ধারণা ছিল যে, ইহরাম বাঁধার পর ঘরের সামনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করা মহা পাপ আর পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করা পুন্যের কাজ উক্ত ধারণার উপর ভিত্তি করে এই আয়াতটি অবতীর্ন হয়।
✅যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, কিন্তু সীমালংঘন কর না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমলংঘনকারীগণকে ভালবাসেন না।
—আল বাকারা - ১৯০
✅তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তোমরা মসজিদুল হারামের নিকট তাদের সঙ্গে ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করো না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা সেখানে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করে, অবশ্যই যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।
—আল বাকারা - ১৯১
✅সূরা আল বাকারার ১৯১ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বর্বর যুগে এবং ইসলামের প্রাথমিক যুগে আরববাসীরা যিলকদ, যিলহজ্ব, মহররম ও রজব এ চার মাসকে সম্মানিত মনে করত এবং এ মাসগুলোতে যুদ্ধ-বিগ্রহ করা হারাম জানত। ৬ষ্ঠ হিজরী সনে যাকে হোদাইবিয়ার সন বলা হয়' যখন মক্কার মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)- কে ওমরা করতে দিল না এবং পরবর্তী বছর কাজা ওমরা আদায় করার উপর পরস্পর চুক্তি সম্পাদিত হল। তখন পরবর্তী বছর যিলকদ মাসে সাহাবায়ে কেরাম সন্দিগ্ধ হলেন যে, আরবের মুসরিকরা যদি চুক্তি নামার অনুকূলে প্রতিশ্রুতি পূর্ন না কারে, তবে অনিবার্যভাবেই যুদ্ধের দামাম বেজে উঠবে আর সম্মানিত মাসে আমরা যুদ্ধ করব না, তখন অনেক বিপদই হবে। তখন আল্লাহ্ তা'য়ালা উক্ত মাসে যুদ্ধের অনুমতি দিয়ে অত্র আয়াত নাযিল করেন।
✅কাফেরেরা যদি কুসংস্কারেরর বিষয়ে বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ পরম করুণাময় অত্যন্ত দয়ালু।
—আল বাকারা - ১৯২
No comments