Header Ads

Header ADS

পার্ট - ২ || সূরাঃ আলে ইমরান

 ✅সূরা আলে ইমরান ৫২ নম্বর আয়াতের ব্যাখা অনুযায়ী, হয়রত ঈসা (আঃ) যখন মানুষের অবিশ্বাস ও বিরোধিতা লক্ষ্য করলেন, তখন সাহায্যকারীদের খোঁজ নিলেন এবং এর আগে তিনি একা একা নবুওয়াতের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। হযরত ঈসা (আঃ)-এর খাঁটি ভক্তদের উপাধি ছিল হাওয়ারী তাদের আন্তরিকতা ও মনের স্বচ্ছতার কারণে অথবা যেহেতু তাঁরা সাদা পোশাক পরিধান করতেন এই জন্য তাদেরকে হাওয়ারী নামে অভিহিত করা হতো। যেমন, রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ভক্ত ও সহচরগণের উপাধি ছিল সাহাবী।

          

✅হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি যা কিছু নাযিল করেছেন, আমরা তাতে ঈমান এনেছি এবং আমরা রাসূলকে অনুসরণ করেছি। সুতরাং আমাদেরকে সেই সকল লোকের মধ্যে লিখে নিন, যারা সত্যের সাক্ষ্যদাতা।

          —আলে ইমরান - ৫৩


✅কাফিরগণ ঈসা (আঃ) এর বিরুদ্ধে গুপ্ত কৌশল অবলম্বন করল এবং আল্লাহও গুপ্ত কৌশল করলেন। বস্তুত আল্লাহ সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কৌশলী।

          —আলে ইমরান - ৫৪


✅তাঁর কৌশল সেই সময় প্রকাশ পেল, যখন আল্লাহ বলেছিলেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে সহি সালামতে ফেরত নিয়ে নেব, তোমাকে নিজের কাছে তুলে নেব এবং যারা কুফরী অবলম্বন করেছে তাদের উৎপীড়ন থেকে তোমাকে মুক্ত করব, আর যারা তোমার অনুসরণ করেছে তাদেরকে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত সেই সকল লোকের উপর প্রবল রাখব, যারা তোমাকে অস্বীকার করেছে। তারপর তোমাদের সকলকে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে। তখন আমি তোমাদের মধ্যে সেই বিষয়ে মীমাংসা করব, যা নিয়ে তোমরা বিরোধ করতে।

          —আলে ইমরান - ৫৫


✅সূরা আলে ইমরানের ৫৫ নম্বর আয়াতের ব্যাখা অনুযায়ী, হযরত ঈসা (আঃ) এর অনুসারী বর্তমান খ্রিস্টানেরা নয়, বরং মুসলিমরাই তাঁর অনুসারী। ইয়াহুদীরা হযরত ঈসা (আঃ) কে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল কিন্তু আল্লাহ্‌ তাকে রক্ষা করে আসমানে তুলে নিয়েছিলেন। ইয়াহুদী খ্রিস্টানরা বলে তাকে হত্যা করেছে এটা তাদের ভুল ধারণা ।


✅যারা কুফরী অবলম্বন করেছে, তাদেরকে আমি দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন শাস্তি দিব এবং তাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কোন সাহায্যকারী থাকবে না।

          —আলে ইমরান - ৫৬


✅যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদেরকে আল্লাহ তাদের পরিপূর্ণ সওয়াব দান করবেন। আল্লাহ জালিমদেরকে ভালোবাসেন না।

          —আলে ইমরান - ৫৭


✅হে নবী! এসব এমন আয়াত এবং নিশ্চিত বর্ণনা, যা আমি তোমাকে পড়ে শোনাচ্ছি।

          —আলে ইমরান - ৫৮


✅আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের মত। আল্লাহ তাঁকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তারপর তাকে বলেছিলেন, হয়ে যাও। ফলে সঙ্গে সঙ্গে সে হয়ে যায়।

          —আলে ইমরান - ৫৯


✅সত্য সেটাই, যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে এসেছে। সুতরাং তুমি সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

          —আলে ইমরান - ৬০


✅তোমার কাছে হযরত ঈসা (আঃ) এর সম্পর্কে যে প্রকৃত জ্ঞান এসেছে, তারপরও যারা এই বিষয়ে তোমার সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হয়, তাদেরকে তুমি বলে দাও, এসো, আমরা ডাকি আমাদের সন্তানদেরকে এবং তোমরা ডাকে তোমাদের সন্তানদেরকে, আমরা ডাকি আমাদের নারীদেরকে এবং তোমরা ডাকে তোমাদের নারীদেরকে, আর আমাদের ডাকি নিজ লোকদেরকে এবং তোমাদের ডাকে নিজ লোকদেরকে, তারপর চল আমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এবং তাদের প্রতি আল্লাহর লানত পাঠাই, যারা মিথ্যাবাদী।

          —আলে ইমরান - ৬১


✅সূরা আলে ইমরানের ৬১ নম্বর আয়াতের ব্যাখা অনুযায়ী, রাসূল (সাঃ) নাজরানের খ্রীষ্টানদের কাছে একটি ফরমান প্রেরন করেন। এতে ধারাবাহীক ভাবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়ঃ (১) ইসলাম কবুল কর, (২) অথবা জিযিয়া কর দাও, (৩) অথবা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। খ্রীষ্টানরা পরষ্পর পরামর্শ করে শোরাহবীল, আব্দুল্লাহ ইবনে শোরাহবীল ও জীবার ইবনে ফয়েজকে রাসূল (সাঃ) এর কাছে পাঠায়। তাঁরা এসে ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁরা হযরত ঈসা (আঃ)- কে উপাস্য প্রতিপন্য করার জন্যে প্রবল বাদানুবাদের আশ্রয় গ্রহন করে। ইতিমধ্যে মুবাহালার উপরোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। এতে রাসূল (সাঃ) প্রতিনিধিদলকে মুবাহালার আহব্বান জানান এবং নিজেও হযরত ফাতিমা, হযরত আলী এবং ইমাম হাসান হোসাঈনকে সঙ্গে নিয়ে মুবাহালার জন্যে প্রস্তুত হয়ে আসেন। এই আত্ববিশ্বাস দেখে শোরাহবীল ভীত হয়ে যায় এবং সাথীদ্বয়কে বলতে থাকে, তোমরা জানো যে, ইনি আল্লাহ্‌র নবী। আল্লাহ্‌র নবীর সাথে মুবাহালা করলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য। মুক্তির অন্য কোন পথ খোঁজ। সঙ্গীদ্বয় বলল, তোমার মতে মুক্তির উপায় কি? সে বলল, আমার মতে নবীর শর্তানুযায়ী সন্ধি করাই উত্তম উপায়। অতঃপর এতেই প্রতিনিধিদল সম্মত হয় এবং রাসূল (সাঃ) তাঁদের ওপর জিযিয়া কর ধার্য করে মীমাংসায় উপনীত হন। এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাজিল হয়। 


✅নিশ্চয়ই এটাই ঘটনাবলীর সত্য বর্ণনা। আল্লাহ ছাড়া কোনও মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও

 প্রজ্ঞাময়।

          —আলে ইমরান - ৬২


✅যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ফাসাদকারীদের সম্বন্ধে ভালো ভাবেই জানেন।

          —আলে ইমরান - ৬৩


✅তুমি বলে দাও যে, হে কিতাবীগণ! তোমরা এমন এক কথার দিকে এসে যাও, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই রকম। আর তা এই যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করব না। তাঁর সঙ্গে কোনও কিছুকে শরীক করব না এবং আল্লাহকে ছেড়ে আমরা একে অন্যকে পালনকর্তা বানাব না। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দাও, সাক্ষী থাক যে, আমরা মুসলিম।

          —আলে ইমরান - ৬৪


✅হে  কিতাবীগণ! তোমরা ইবরাহীম সম্পর্কে কেন বিতর্ক করছ, অথচ তাওরাত ও ইনজীল তো তাঁর পরে নাযিল হয়েছে। তোমরা কি এতটুকুও বোঝ না।

          —আলে ইমরান - ৬৫


✅শোন, তোমরাই তো তারা, যারা এমন বিষয়ে বিতর্ক করেছ, যে বিষয়ে কিছু না কিছু জ্ঞান তোমাদের ছিল। এবার এমন সব বিষয়ে কেন বিতর্ক করছ, যে সম্পর্কে তোমাদের মোটেও জ্ঞান নেই। আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।

          —আলে ইমরান - ৬৬


✅ইবরাহীম (আঃ) ইয়াহুদীও ছিল না এবং খ্রিস্টানও নয়। বরং তিনি তো একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। তিনি কখনও শিরককারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।

          —আলে ইমরান - ৬৭


✅ইবরাহীম (আঃ) এর সাথে ঘনিষ্ঠতার সর্বাপেক্ষা বেশি হকদার লোক তারা, যারা তাঁর অনুসরণ করেছে এবং এই নবী অর্থাৎ শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং সেই সকল লোক, যারা ঈমান এনেছে। আর আল্লাহ হচ্ছে মুমিনদের বন্ধু।

          —আলে ইমরান - ৬৮


✅হে মুমিনগণ! কিতাবীদের মধ্যে একটি দল তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে চায়, প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে পথভ্রষ্ট করছে না, যদিও তাদের সেই বিষয়ের উপলব্ধি নেই।

          —আলে ইমরান - ৬৯


✅হে কিতাবীগণ! তোমরা আল্লাহর আয়াতসমূহ কেন অস্বীকার করছ, যখন তোমরা নিজেরাই সাক্ষী যে, তা আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ।

          —আলে ইমরান - ৭০


✅হে কিতাবীগণ! তোমরা কেন সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করছে এবং জেনে শুনে কেন সত্য গোপন করছ।

          —আলে ইমরান - ৭১


✅কিতাবীদের এক দল বললো, মুসলমানগণের উপর যে কিতাব নাযিল হয়েছে, দিনের প্রথম ভাগে তাতে ঈমান আনবে আর দিনের শেষ ভাগে তা অস্বীকার করবে। হয়তো এভাবেই মুসলমানগণও তাদের দ্বীন থেকে ফিরে যাবে। 

          —আলে ইমরান - ৭২


✅সূরা আলে ইমরানের ৭২ নম্বর আয়াতের ব্যাখা অনুযায়ী, মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে ছাইফ, আদী ইবনে যাইদ এবং হারেস ইবনে আউফ নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিল যে, সকালে মুহাম্মাদ (সাঃ) এবং তাঁর সহচর বিন্দুদের সাথে ইমান আনয়ন করবে আর সন্ধ্যায় মোর্তাদ হয়ে যাবে এবং এটাই  বলে দিবে যে, আমাদের তাওরাত কিতাব পাঠ করে এবং আমাদের আলেমদের নিকট জিজ্ঞেস করে যে, সকল নিদর্শন জানতে পারলাম যে, মুহাম্মদ (সাঃ) নবী নন। আমাদের চালের মাধ্যমে মুসলমানরাও হয়তো স্বধর্ম ত্যাগ করবে। তখনই এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাযিল হয়, যাতে মুসলমানরা এই ধোঁকা হতে সাবধান হয়।


✅যারা তোমাদের ধর্মের অনুসারী, তাদের ছাড়া অন্য কাউকে বিশ্বাস করবে না। আপনি তাদের বলে দিন, আল্লাহ প্রদত্ত হেদায়েতই প্রকৃত হেদায়েত। তোমরা এসব করছ কেবল এই জেদের বশবর্তীতে যে, তোমাদেরকে যে জিনিস অর্থাৎ নবুওয়াত ও আসমানী কিতাব দেওয়া হয়েছিল, সে রকম জিনিস অর্থাৎ নবুওয়াত ও আসমানী কিতাব অন্য কেউ কেন পাবে? কিংবা তারা অর্থাৎ মুসলমানগণ তোমাদের প্রতিপালকের সামনে তোমাদের উপর বিজয়ী হয়ে গেল কেন? আপনি বলে দিন, শ্রেষ্ঠত্ব আল্লাহরই হাতে। তিনি যাকে চান তা দান করেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।

          —আলে ইমরান - ৭৩


✅আল্লাহ যাকে ইচ্ছা নিজের বিশেষ অনুগ্রহ দান করেন। এবং আল্লাহ মহা অনুগ্রহের মালিক।

          —আলে ইমরান - ৭৪


✅কিতাবীদের মধ্যে এমনও লোক আছে, যার কাছে তুমি সম্পদের একটা স্তূপও যদি আমানত রাখ, তবে সে তা তোমাকে যথারীতি পরিশোধ করবে। আবার তাদের মধ্যেই এমনও লোক আছে, যার কাছে একটি দীনারও আমানত রাখলে সে তোমাকে তা ফেরত দেবে না যদি না তুমি তার মাথার উপর দাঁড়িয়ে থাক। তাদের এ কর্মপন্থা এ কারণে যে, তারা বলে থাকে, উম্মীদের ব্যাপারে আমাদের থেকে কোন কৈফিয়ত নেওয়া হবে না। আর এভাবেই জেনে শুনে তারা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যাচার করে।

          —আলে ইমরান - ৭৫


✅সূরা আলে ইমরানের ৭৫ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হযরত ইবনে আব্বাস (রাজিঃ) হতে বর্নিত আছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালামের নিকট একজন কুরাইশ বংশীয় লোক দু'হাজার দু'শ আশরাফী বা স্বর্ন  মুদ্রা আমানত রেখেছিল। আমানতদাতা এইগুলো পরে ফেরৎ তলব করার সাথে সাথে তিনই সত্বর এইগুলো উপস্থিত করে দিলেন। আর একজন কুরাইশী লোক ফখ্‌খাছ ইবনে আযুরা নামক ইহুদীর নিকট একটি দিনার আমানত রেখেছিল। লোকটি যখন পরে তা ফেরৎ চাইল তখন সে প্রত্যাখ্যান করল এবং বলল, যারা ইহুদী নয়, তারা মূর্খ, এবং মূর্খদের সম্পদ আত্নসাৎ করা আমাদের জন্য বৈধ এবং শরীয়তের বিধান মতে এতে আমরা দায়ী হব না । এই বিষয়ে আয়াতটি অবতীর্ন হয়। রুহুল মায়ানীতে ইবনে জুরাইজ (রাজিঃ) হতে বর্নিত আছে, আইয়ামে জাহিলিয়াতের সময় ইহুদীদের সাথে মুসমামানদের ক্রয় রাসুলুল্লাহ বিক্রয় সংক্রান্ত মু'আমালা চলতে ছিল। কিন্তু পরে কুরাইশী কাফেরদের মধ্যে যারা মুসলাম হয়ে যায়, তাঁরা যখন পূর্ব লেনদেনের কথা উত্থাপন করেন তখন সে মহাজন ইহুদীরা বলে ওঠে, আমাদের নিকট না তোমাদের কোন আলামত আছে, আর না আমরা তোমাদের প্রাপ্য পরিশোধ করব; যেহেতু তোমরা স্ব-ধর্ম করেছ' এবং আরও বলতে লাগল যে এই আদেশ আমাদের তৌরাতে আছে। তখন আল্লাহ্‌ তা'য়ালা বললেন, "তারা জেনে শুনে আল্লাহ্‌র প্রতি মিথ্যারোপ করে।


✅কেন কৈফিয়ত নেওয়া হবে না? নিয়ম তো এই যে, যে কেউ নিজ অঙ্গীকার পূর্ণ করে ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে, আল্লাহ এরূপ মুত্তাকীদের ভালোবাসেন।

          —আলে ইমরান - ৭৬


✅যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার ও নিজেদের প্রতিজ্ঞার বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, আখিরাতে তাদের কোনও অংশ নেই। আর আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। তাদের জন্য থাকবে কেবল যন্ত্রণাময় শাস্তি।

          —আলে ইমরান - ৭৭


 ✅নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে একদল লোক এমন আছে, যারা কিতাব তাওরাত পড়ার সময় নিজেদের জিহ্বাকে পেঁচায়, যাতে তোমরা তাদের পেঁচিয়ে তৈরি করা সে কথাকে কিতাবের অংশ মনে কর, অথচ তা কিতাবের অংশ নয় এবং তারা বলে, এটা আল্লাহর নিকট থেকে অবতীর্ণ, অথচ তা আল্লাহর নিকট থেকে অবতীর্ণ নয় এবং এভাবেই তারা জেনে শুনে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে।

          —আলে ইমরান - ৭৮


✅কোনও মানুষের জন্য সঙ্গত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমত ও নবুওয়াত দান করবেন আর সে তা সত্ত্বেও মানুষকে বলবে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও। ৩৯ এর পরিবর্তে (সে তো এটাই বলবে যে,) তোমরা আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও, যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দান কর এবং যেহেতু তোমরা অধ্যয়ন কর।

         —আলে ইমরান - ৭৯


✅সূরা আলে ইমরানের ৭৯ নম্বর আয়াতের ব্যাখা অনুযায়ী, ঘটনা ইহুদী আলেমরা এবং নাজরানের ঈসায়ীরা নবী করীম (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হলে তিনই তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন, তখন ইহুদীরা বলল, "হে মুহাম্মাদ! তোমার আকাংক্ষা আমরা তোমরা ইবাদত শুরু করি, যেমন খৃষ্টানরা ঈসা (আঃ)-এর ইবাদত করে? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, তওবা নাঊজু বিল্লাহ, আমি তো বলছি, তোমাদের মধ্যে যেরূপ দ্বীনদারি ছিল, অর্থাৎ আসমানী কিতাব পাঠ করতে এবং শিক্ষা দিতে এবং তদনুযায়ী আমল করতে, এখন তোমরা আমার সংস্পর্শে থেকে পুনরায় সেই উৎকর্ষতা অর্জন কর; যাতে তোমাদের পরকালের অবস্থাও ঠিক হয়ে যেত। এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাযিল হয়। হযরত হাসান (রাজিঃ) হতে এটাও বর্ণিত আছে, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সমীপে আবেদন করল, "আমরা তো কেবল আপনাকে সালামই করি, যেরূপ সালাম আমরা সচরাচর পরস্পরের মধ্যে করে থাকি, আমরা কি আপনাকে সেজদা করব না? যদ্দ্বারা আপনি আমাদের মধ্যে স্বতন্ত্র হয়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এতে বাধা দিয়ে বললেন, কখনও না বরং তোমরা আপন নবীর সম্মান কর এবং হক্বদারের হক্ব নিরীক্ষণ করে লও। কেননা, আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কাকেও সেজদা করা দুরস্ত নয়।


✅ফেরেশতাগণকে ও নবীগণকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করতে সে তোমাদেরকে নির্দেশ দিতে পারে না। তোমাদের মুসলিম হওয়ার পর সে কি তোমাদেরকে কুফরীর নির্দেশ দিবে। 

          —আলে ইমরান - ৮০


✅তাদেরকে সেই সময়ের কথা স্মরণ করাও, যখন আল্লাহ নবীগণ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন, আমি যদি তোমাদেরকে কিতাব ও জ্ঞান দান করি, তারপর তোমাদের নিকট কোন রাসূল আগমন করে এবং তোমাদের কাছে যে কিতাব আছে তার সমর্থন করে, তবে তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং অবশ্যই তাকে সাহায্য করবে। আল্লাহ সেই নবীদেরকে বলেছিলেন, তোমরা কি এই কথা স্বীকার করছ এবং আমার পক্ষ হতে প্রদত্ত এই দায়িত্ব গ্রহণ করছ? তারা বলেছিল, আমরা স্বীকার করছি। আল্লাহ বললেন, তবে তোমরা একে অন্যের স্বীকারোক্তি সম্পর্কে সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম। 

          —আলে ইমরান - ৮১


✅অতঃপর যারা হেদায়েত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তারাই নাফরমান।

          —আলে ইমরান - ৮২


✅তারা কি আল্লাহর দীনের পরিবর্তে অন্য কোনও দীনের সন্ধানে আছে? অথচ আসমান ও যমীনে যত মাখলুক আছে, তারা সবাই আল্লাহরই সামনে মাথা নত করে। কতক তো স্বেচ্ছায় এবং কতক বাধ্য হয়ে। এবং তাঁরই দিকেই তাদের সকলকে ফিরে যেতে হবে।

          —আলে ইমরান - ৮৩


✅বলে দাও, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, আমাদের উপর যে কিতাব নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁদের বংশধরের প্রতি, যে হেদায়েত নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি এবং মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীগণকে তাঁদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা দেওয়া হয়েছে তার প্রতি। আমরা তাঁদের উল্লিখিত নবীদের মধ্যে কোনও পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই নিকট আত্মসমর্পণকারী।

          —আলে ইমরান - ৮৪


✅যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনও ধর্ম বা দ্বীন অবলম্বন করতে চাবে, তার থেকে সেই ধর্ম বা দ্বীন কস্মিণকালেও কবুল করা হবে না এবং আখিরাতে সে মহা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

          —আলে ইমরান - ৮৫


✅কেমন করে আল্লাহ এমন জাতিকে হেদায়েত দান করবেন, যারা ঈমান আনার পর এবং রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্য দেয়ার পর এবং তাদের নিকট প্রমাণ এসে যাওয়ার পর কুফরী করেছে। আর আল্লাহ এই রুপ জালেম সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না।

—আলে ইমরান - ৮৬


✅সূরা আলে ইমরানের ৮৬ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আনসারীদের এক ব্যক্তি মুর্তাদ হয়ে গিয়েছিল। আর অন্য রেওয়ায়েতে বর্ণিত তোমা ও হারেছ নামক দু ব্যক্তি মুর্তাদ হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তারা লজ্জিত হয়ে আপন গোত্রের লোকদেরকে বলল, তোমরা হুযুর (সাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করে দেখ, আমাদের জন্য তওবা করার কোন পথ আছে কি না? এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাযিল হয়। আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আয়াতটি লিপিবদ্ধ করে তাদের স্ব-গোত্রীয় লোকদের নিকট পাঠিয়ে দিলে তারা পুনরায় ইসলাম গ্রহন করলেন।


✅যারা কুফরী করে এই রূপ লোকদের শাস্তি এই যে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফিরিশতাদের ও সমস্ত মানুষের লানত অর্থাৎ অভিশাপ।

          —আলে ইমরান - ৮৭

          

✅যারা কুফরী করে তারা লানত বা অভিশাপের মধ্যে স্থায়ীভাবে থাকবে। তাদের শাস্তি হালকা করা হবে না, আর তাদেরকে অবকাশও দেওয়া হবে না।

          —আলে ইমরান - ৮৮


✅যারা কুফরীর পর তাওবা করবে ও নিজেদেরকে সংশোধন করবে, তাদের জন্য আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

          —আলে ইমরান - ৮৯


✅যারা ঈমান আনার পর কুফরী অবলম্বন করেছে, তারপর কুফরীতে অগ্রগামী থেকেছে, তাদের তাওবা কিছুতেই কবুল হবে না এবং এরূপ লোকই বিপথগামী। 

          —আলে ইমরান - ৯০


✅সূরা আলে ইমরানের ৯০ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হযরত ক্বাতাদাহ ও হযরত হাসান (রাজিঃ) বললেন, ইহুদী নাসারারা প্রথমে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর গুনাবলী ও চারিত্রিক আদর্শের প্রতি ইমান এনেছিল। কিন্তু পরে অস্বীকার করে এবং কুফরীর উপর অগ্রগামী হয়ে যায়, এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি নাযিল হয়।


✅যারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং কাফির অবস্থায়ই মারা গেছে, তারা যদি নিজেদের প্রাণ রক্ষার্থে সারা পৃথিবী পরিমাণ স্বর্ণও দিতে চায়, তবুও তাদের তওবা কবুল করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং পক্ষান্তরে তাদের কোনই সাহায্যকারী নেই।

       —আলে ইমরান - ৯১


✅সূরা আলে ইমরানের ৯১ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হযরত আনাস (রাজিঃ) হতে বর্ণিত, কোন জাহান্নামীকে কিয়ামতের দিন যখন বলা হবে, গোটা পৃথিবীটাই সামগ্রিক ভাবেই যদি তোমার আছে ধরে লওয়া হয়, তবে এই শাস্তি হতে নাজাত লাভের জন্য বিনিময় স্বরূপ তাঁর সবই দিয়ে দিবে তো? তখন সে উত্তরে হ্যাঁ বলবে। আল্লাহ্‌ তা'য়ালা বললেন, পৃথিবীতে এর চেয়ে অনেক সহজ কাজই তোমার নিকট চেয়েছিলাম। তোমার পিতা আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে বের করে তোমার নিকট হতে স্বীকৃতি নিয়েছিলেন? আমার সাথে কাকেও অংশিদার সাব্যস্ত না করার, কিন্তু তা তুমি রক্ষা করলে না এবং শরীক করা হতে বিরত থাকলে না।


✅তোমরা কিছুতেই পুণ্যের বা কল্যাণের নাগাল পাবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তু হতে আল্লাহর জন্য ব্যয় করবে। তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, আল্লাহ সেই সম্পর্কে ভালো ভাবেই জানেন।

          —আলে ইমরান - ৯২


✅সূরা আলে ইমরানের ৯২ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সূরা আলে ইমরানের ৯২ নম্বর আয়াত নাযিল হওয়ার পর আন্‌ছারের মধ্যে সর্বাধিক সম্পদশালী ব্যক্তি হযরত আবু তালহা আনছারী (রাজিঃ) মসজিদে নবুবীর সম্মুখে তাঁর ব্যারোহা' নামক প্রিয়তম বাগানটি আল্লাহ্‌র রাস্তায় দান করার কথা ঘোষণা করেন। এতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অত্যন্ত খুশী হলেন এবং তাঁর চাচতো ভাই ও অন্যান্য আত্নীয়-স্বজনদের জন্য ওয়াকফ করে দিলেন। উল্লেখ, বাগানটিতে সুমিষ্ট পানি ছিল এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তথা হতে পানি পান করতেন। আর এক সময় হযরত ওমর (রাজিঃ) হযরত আবু মূসা আশয়ারীকে একজন বাঁদি ক্রয় করে আনতে বললে, তিনি ক্রয় করে আনলেন এবং হযরত ওমর তা দর্শনে মুগ্ধ হলেন এবং সাথে সাথে এই আয়াতের কথা স্বরণ হওয়া মাত্র বাঁদিকে আজাদ করে দিলেন।


✅তাওরাত নাযিল হওয়ার আগে, বনী ইসরাঈলের জন্য সমস্ত খাদ্যদ্রব্য হালাল ছিল, যা মুসলিমদের জন্য হালাল কেবল সেই বস্তুু ছাড়া, যা ইসরাঈল অর্থাৎ ইয়াকুব (আঃ) যা নিজেদের জন্য হারাম করেছিলেন। হে নবী! ইয়াহুদীদেরকে বলে দাও, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে তাওরাত নিয়ে এসো এবং তা পাঠ করো। 

          —আলে ইমরান - ৯৩


✅অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে, তারাই যালেম এবং সীমালংঘনকারী।

          —আলে ইমরান - ৯৪


✅আপনি বলুন, আল্লাহ সত্য বলেছেন। সুতরাং তোমরা ইবরাহীমের দ্বীন বা ধর্মের অনুসরণ কর, যিনি ছিলেন সম্পূর্ণরূপে সঠিক পথের উপর। যারা আল্লাহর শরীক স্থির করে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।

          —আলে ইমরান - ৯৫


✅নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম মানুষের ইবাদতের জন্য যে ঘর তৈরি করা হয়, সেটা হচ্ছে মক্কায় অবস্থিত, যা বরকতময় এবং সমগ্র জগতের মানুষের জন্য হিদায়াতের উপায়। 

          —আলে ইমরান - ৯৬


✅তাতে আছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী, মাকামে ইবরাহীম। আর যে তাতে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে যারা সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে, তাদের উপর আল্লাহর জন্য এই ঘরের হজ্জ করা ফরয। কেউ এটা অস্বীকার করলে, সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।

          —আলে ইমরান - ৯৭


✅সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই নিশানা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, এই ঘর আল্লাহ্‌র দরবারে গৃহীত এবং এই ঘরকে আল্লাহ্‌ তা'য়ালা নিজের ঘর হিসাবে মনোনীত করেছেন ও মর্জাদা দিয়েছেন।


✅বলে দাও, হে কিতাবীগণ! তোমরা আল্লাহর আয়াতসমূহ কেন অস্বীকার করছ? তোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ তার সাক্ষী।

          —আলে ইমরান - ৯৮


✅হে কিতাবীগণ! মুমিনদেরকে আল্লাহর পথে বাধা দিচ্ছে কেন, তাতে বক্রতা সৃষ্টির চেষ্টা করছ কেন, অথচ তোমরা নিজেরাই প্রকৃত অবস্থার সাক্ষী? তোমরা যা কিছু করছ, আল্লাহ সে সম্পর্কে গাফিল নন।

          —আলে ইমরান - ৯৯


✅হে মুমিনগণ! তোমরা যদি কিতাবীদের একটি দলের অর্থাৎ ইয়াহুদীদের কথা মেনে নাও, তবে তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনার পর পুনরায় কাফির বানিয়ে ছাড়বে।

          —আলে ইমরান - ১০০


✅সূরা আলে ইমরানের ১০০ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, শম্মাছ ইব্‌নে কায়েছ নামক এক ইহুদী মুসলমানদের কথা শুনলে সর্বদা হিংসায় জলে মরত। একদা আনছারীদের আঊছ ও খাজরাজ বিখ্যাত গোত্রদ্বয়ের লোকদেরকে এক সমাবেশ দেখে তাঁর হিংসানল দ্বিগুণ ভাবে জ্বলে উঠল। তখন সে তাদের প্রাগৌতিহাসিক শত্রুতা জাগিয়ে তোলার পথ খোঁজ করতে লাগল। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিল যে, উভয় গোত্রের মধ্যে ইসলাম পূর্ব বছরের পর ধরে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছিল এবং তৎসম্বন্ধে বীরত্ব ও উত্তেজনা ব্যঞ্জক যে সকল কবিতা তাদের এই ইসলামিক ভ্রাতৃত্বমূলক অধিবেশনে আবৃত্তি করে দেওয়াই শ্রেয় হবে, যাতে তাদের পূর্ব শত্রুতামূলক ভাবে গজিয়ে উঠে। অতঃপর সেখানে উক্ত প্রকৃতির কবিতাবৃত্তি হওয়া মাত্রই তাদের পারচীন সুপ্ত হিংসানল ধূমায়িত হতে লাগল এবং পরস্পরের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও কর্কশালাপ শুরু হয়ে গেল, অবশেষে পরস্পর যুদ্ধের প্রস্তুতি নিল এবং দিন তারিখ ও স্থান ঠিক করে ফেলল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট যখন এই সংবাদ পৌঁছল, তখন তিনি দ্রুত তাদের নিকট গমন পূর্বক বললেন, এটা কেমন আক্রোশের বিষয় যে, আমি স্বয়ং তোমাদের মধ্য বিদ্যমান রয়েছি এবং তোমরা সকলেই মুসলামানও হয়েছে এবং তোমাদের মধ্যে সুমধুর ঐক্যও সংঘটিত হয়েছে, অতঃপর তোমরা সেই জাহেলিয়্যাতের দিকে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করছ? তৎক্ষণাত তাঁরা সম্বিত ফিরে পেলেন এবং বুঝত পারলেন যে, এই ঊত্তেজনাটি একটি শয়তানি চক্রান্ত ছিল। অতঃপর তাঁরা পরস্পর আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে ক্রন্দন করতে করতে তওবা করে নিল। তখন এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্র আয়াতটি অবতীর্ন হয়। 


✅তোমরা কি করে কুফরী অবলম্বন করতে পার, যখন তোমাদের সামনে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হচ্ছে এবং তাঁর রাসূল তোমাদের মধ্যে বর্তমান রয়েছেন? আর আল্লাহর নীতি এই যে, যারা আল্লাহর আশ্রয়কে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে, তারা অবশ্যই সরল পথে পরিচালিত হবে।

          —আলে ইমরান - ১০১


✅হে মুমিনগণ! অন্তরে আল্লাহকে সেই ভাবে ভয় কর, যেমন ভাবে তাকে ভয় করা উচিত।  সাবধান!  অন্য কোনও অবস্থায় যেন তোমাদের মৃত্যু না আসে, অর্থাৎ অবশ্যই মুসলমান না হয়ে তোমরা মৃত্যুবরণ করো না।

          —আলে ইমরান - ১০২

No comments

Powered by Blogger.